পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের সরকারী খাস জমি দখল করা হচ্ছে। কালীবাড়ির কালীমন্দির সংলগ্ন ঢালাই সড়ক লাগোয়া প্রায় ৭ শতক খাস জমি দখলে নিয়ে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন ভোলানাথ সাধু। এমনি করে কপিলমুনি উপশহরে একের পর এক কোটি কোটি টাকার সরকারী জায়গা দখল করে সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ আবাসন গড়ে তুললেও এ পর্যন্ত একটি জায়গাও উদ্ধার করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ভূমিকর্তারা। সরকারী এসব মূল্যবান জায়গা উদ্ধারে এক দিকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, অন্যদিকে নগদ নারায়নের নগ্ন খেলা হিসাবে মনে করছেন সচেতন মহল। এক কথায় যেন খাস জমি দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ভূমি গ্রাসীরা।
জানাগেছে, মূলত আশির দশক থেকেই খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি সদরে সরকারী মূল্যবান খাস জমি দখল শুরু হয়। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর যাবৎ এই দখল কাজ চলতে থাকায় কপিলমুনি উপশহরে সরকারী খাস জমির প্রায় আশি শতাংশ গিলে ফেলেছে দখলবাজরা। আর অবশিষ্ট সরকারী সম্পত্তির প্রায় সবটুকুই চলতি বছরে দখল হয়ে গেছে। দখলদার, হরিদাশকাঠীর মুজিবর, আজগর, হালিম ও সবুর, শ্রীরামপুরের লেয়াকাত সরদার ও সুশান্ত বিশ্বাস, কানাইদিয়ার আনন্দ ও আলাউদ্দিন, গংগারামপুরের তালেব মোড়ল, সোনাতনকাঠির শেখ আব্দুর রউফ, কপিলমুনির সুকুমার সাধু ছাড়াও প্রায় অর্ধ শতাধিক দখলদারদের কবলে পড়েছে কপিলমুনি উপশহরের কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারী সম্পত্তি। সর্বশেষ গত ১৬ মার্চ কালিবাড়ি সংলগ্ন ভোলা সাধু কর্তৃক দখলকৃত খাস সম্পত্তির জরিপ কাজ পরিচালনা করেন উপজেলা সার্ভেয়ার কাওসার আলী। সেখানে ঢালাই সড়ক সংলগ্ন সীমানায় লাল নিশান টানালেও জমির অপর প্রান্তে কোন নিশান না গেড়ে অদৃশ্য কারণে চলে আসেন তিনি। এ বিষয়ে সার্ভেয়ার কাওসার আলী জানান, কপিলমুনি মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানে ১০৮ দাগে তিনি জরিপ কাজ পরিচালনা করেছেন। তবে সেখানে কতটুকু খাস তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি। এক পর্যায় তিনি আরও বলেন, যেহেতু খাস তাদের অনুকূলে সেহেতু আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে এসেছি।
এলাকাবাসী জানান, কালীবাড়ি সংলগ্ন ভোলা সাধুর দখলে থাকা ১০ শতক জমির মধ্যে প্রায় ৭ শতক জমিই খাস। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা। এলাকাবাসী আরোও জানান, ভোলা সাধুর স্বার্থ রক্ষার্থে সার্ভেয়ার কওসার নামমাত্র জরিপ কাজ করেছেন। যা রীতিমতো সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে ভোলা সাধু জানান, তার নামে উক্ত জমি রেকর্ড হয়েছে। কোন খাস জমিতে তিনি ঘর করছেন না। এ বিষয়ে রেকর্ড দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা হাসমত আলী বলেন,‘জমিটি ১ নং খতিয়ানে ১০৮ দাগে পাকিস্তান প্রদেশ পক্ষে কালেকটর খুলনা নামে রেকর্ড রয়েছে। সার্ভেয়ার কাওসার সাহেব জরিপ করেছেন, তিনিই ভাল জানেন।’