জামালপুর পৌরসভার রশিদপুর বাজার এলাকায় গত রবিবার গ্যাসের চুলার সিলিন্ডারের পাইপ লিকেজ হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে অঙ্গার হন গৃহবধূ সানজিদা আক্তার শিপরা (২৫)। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রায় শতভাগ দগ্ধ শরীর নিয়ে স্বামী ইকরামুল হক শুভ্রও (৩৩) ঘটনার তিন দিনের মাথায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) মাঝরাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ইকরামুল স্থানীয় মো. বেলাল হোসেনের একমাত্র ছেলে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা রাত ১২টার দিকে ইকরামুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্র জানায়, জামালপুর পৌরসভার রশিদপুর বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে খোলাবাজারে ডিজেল-পেট্রলের ব্যবসা করতেন ইকরামুল। দোকানের কাছেই স্থানীয় মোজাম্মেল হোসেনের একটি টিনের ঘর ভাড়া নিয়ে স্ত্রী সানজিদা ও চার বছরের একমাত্র কন্যাসন্তান ছয়ফাকে নিয়ে বসবাস করতেন। গত রবিবার সকালে তার স্ত্রী সানজিদা ঘরের ভেতরে গ্যাসের চুলায় রান্না করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ লিকেজ হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়ে পাশে থাকা পেট্রলের ড্রামে আগুন ধরে যায়।
আগুন দ্রুত সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি পৌঁছার আগেই যাবতীয় আসবাবপত্রসহ সারা ঘর পুড়ে যায়। এ সময় ইকরামুল ও তার স্ত্রী সানজিদা ঘরের ভেতরে আগুনের মধ্যে আটকা পড়েন। এতে আগুনে পুড়ে সারা শরীর অঙ্গার হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সানজিদা। তাকে উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তার স্বামী ইকরামুল ঘরের দরজার কাছে গিয়ে পড়ে যান। আগুনে তার শরীরের প্রায় শতভাগ মারাত্মকভাবে ঝলসে যায়। তাকে উদ্ধার করে ঘটনার দিনই তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল। ওই দিন আগুন লাগার আধা ঘণ্টা আগে ইকরামুলের মা তাদের সন্তান ছয়ফাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে শিশুটি এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পায়।