যশোরের মণিরামপুরে রেহেনা খান নামে এক ইউপি সদস্য ও তার স্বামীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ও সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে পৃথক হামলায় তারা আহত হন।
আহত রেহেনা খান উপজেলার মশ্মিমনগর ইউপির (১,২ ও ৩) নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। তার স্বামী খলিলুর রহমান খান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সভাপতি।
আহত স্বামী-স্ত্রী মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হামলার ঘটনা বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
খলিলুর রহমান খান বলেন, রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে মশ্মিমনগর বাজারে ইদ্রিস আলীর চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। এসময় ৩০-৩৫ জন লোক এসে দোকানদারের উপর হামলা চালায়। প্রতিবাদ করায় হামলাকারীরা লোহার রড ও দা দিয়ে আমাকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে জখম করে। রাতেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
এদিকে সোমবার সকালে হামলাকারীরা খলিলুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তার মেম্বর স্ত্রী রেহেনা খানকে মারপিট করে। রেহেনা খান তিনবারের নির্বাচিত সংরক্ষিত নারী সদস্য।
রেহেনা খান বলেন, রাতে আমার স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। ফিরে যাওয়ার পর সকালে ওরা আমার বাড়ি আসে। আমি থানায় গিয়ে মামলা করেছি এই সন্দেহে তারা আমাকে পিটিয়েছে। আমি ডান হাতে মারাত্বক আঘাত পেয়েছি।
স্থানীয়রা বলছেন, হামলাকারীদের মধ্যে খলিলুর রহমানের আপন বড় ভাই আব্দুর রহিম খানও রয়েছেন। তিনি দলবল পাকিয়ে নিয়ে আসেন এবং নিজে গাছি দা দিয়ে খলিলুরের বাম হাতে কোপ দেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। মশ্মিমনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী দুটি গ্রুপ রয়েছে। আব্দুর রহিম ও খলিলুর পৃথক দুই গ্রুপের সাথে যুক্ত। তাদের দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। মশ্মিমনগর দাখিল মাদরাসায় এক কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি দুই গ্রুপের বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকালে আবার আব্দুর রহিম খান স্ত্রী, দুই ছেলে ও প্রতিবেশী দুই যুবককে নিয়ে হামলা চালিয়ে খলিলুরের স্ত্রীকে মারপিট করেন।
এদিকে খলিলুর রহমান ও তার মেম্বর স্ত্রীকে মারপিটের ঘটনায় সোমবার সকালে তাদের সমর্থকরা আব্দুর রহিম খানকে মারপিট করেছে বলে জানা গেছে। তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, খলিলুর রহমান ও আব্দুর রহিম আপন ভাই। তাদের মধ্যে স্থানীয়ভাবে দুটি গ্রুপ রয়েছে। মারামারিতে খলিলুর ও তার বড়ভাই আব্দুর রহিম আহত হয়ে দুই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। খলিলুরের স্ত্রী থানায় মামলা করেছে। অপরপক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।